চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন।

মাহিদুল ইসলাম ফরহাদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

ভোলাহাট উপজেলার মুশরীভূজা ইউসুফ আলী স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আজগার আলীর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, উপবৃত্তির টাকা আদায়সহ নানা অনিয়ম- দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। এসব অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে তার পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন জামতলা বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা।

প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বলেন, মুশরীভূজা হাই স্কুল এন্ড কলেজে অবৈধ প্রধান শিক্ষক আজগার আলী, সাবেক সভাপতি  আলাউদ্দিন ও কথিত সাদা মনের মানুষ  জিয়াউল হক মিলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যোগসাজস করে ব্যক্তিগত ভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে বিগত বহু বছর ধরে বিদ্যালয়ের স্বার্থের পরিপন্থি কিছু কার্যকলাপ চালিয়ে বিদ্যালয়ের এবং কমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্ষতি সাধন করে চলেছে।

তারা বলেন, ১৪ সালে  আজগার আলী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পান। অত:পর গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কমিটির ৪/৫জন সদস্যের সম্পূর্ণ অগোচরে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ হাতিয়ে নেন। বিষয়টি শিক্ষক প্রতিনিধির মাধ্যমে জানা জানি হলে বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক  আবদুল করিম  জিজ্ঞাসা করলে তিনি সকল শিক্ষকের সামনে তা অস্বীকার করেন। কিন্তু করিম তাঁর অবৈধ নিয়োগের বিরুদ্ধে ডিজি অফিসে অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তের পর তার প্রধান শিক্ষকের চাকুরী চলে যায়। তিনি তদবির করে বিশেষ বিবেচনায় পূর্ব পদে (সহকারি প্রধান শিক্ষক) চাকুরী ফিরে পান। পরবর্তীতে সভাপতি পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে সাদা মনের মানুষ  জিয়াউল হক ও সভাপতির সাহায্যে অফিসে মিথ্যা তথ্য দাখিলের মাধ্যমে পুণরায় প্রধান শিক্ষকের পদ ভাগিয়ে নেন যা সম্পূর্ণ বে আইনী। 

শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির সময় তিনি আমাদের প্রতিশ্রুতি দেন যে, বিনা পয়সায় আমাদের ভর্তি ও সম্পূর্ণ বই প্রদান করবেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ৫১ জনের নিকট থেকে উপবৃত্তির ১৫’শত টাকা করে জোর পূর্বক আদায় করেন। যা সম্পূর্ণ বে-আইনী ও শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারনা।

তারা অভিযোগ করে বলেন, বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সভাপতি মোঃ আলাউদ্দিন ও সদস্য মোঃ জিয়াউল হকের সহযোগিতায় নিয়োগ বানিজ্যের প্রায় দেড় কোটি টাকা বিনা হিসাবে লোপাট করেন। একটি টাকাও বিদ্যালয়ের কল্যাণ  ব্যয় হয়নি। বিদ্যালয়টিতে কোন শিক্ষক কর্মচারীর চাকুরী অবৈধ প্রধান শিক্ষকের নিকট নিরাপদ নয়। এছাড়াও নিযোগ বাণিজ্য স্বেচ্ছারিতার মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক আজগার আলী বিদ্যালয়ের আইন শৃংখলা পরিপন্থি নানা কার্যকলাপের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের স্বার্থ বিরোধী কাজে জড়িত আছেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আমলে নিয়ে অবিলম্বে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ, বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। তবে ওইদিন প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে যাননি।

তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুশরীভূজা ইউসুফ আলী স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আজগার আলীর জানান- এসকল অভিযোগের বিষয়ে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বক্তব্য দিব।

প্রতিষ্ঠানের সাবেক সভাপতি  আলাউদ্দিন বলেন, নিয়োগ দেওয়ার জন্য টাকা নেওয়া হয়েছে এবিষয়ে আমার জানা নাই। পরীক্ষার মাধ্যমে সচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি তাহমিদা আক্তার বলেন, প্রধান শিক্ষক আমার কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিলে আমি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিবো। কোন শিক্ষকে পদত্যাগ করানোর ক্ষমতা আমার হাতে নাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *