
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ঢাকার সাভারে বসত বাড়ি ভাংচুর করে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে সাভার প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুল হুদা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে ভুক্তভোগী আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে ঢাকার চীপ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাজমুল হুদাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
ঘটনার বিষয়টি আমলে নিয়ে সাভার মডেল থানাকে তদন্তের পর রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার মামলার নথি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার পুলিশ পরিদর্শক (জিআরও) আক্তার হোসেন।
এর আগে শুক্রবার (২৫ জুন) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে বাদীর বসত বাড়ী সাভার পৌরসভার ভাগলপুর এলাকায় জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ আছে, সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চাপে ফেলে এখন পর্যন্ত ৭ বারেরও বেশি সময় জমিটি দখলের চেষ্টা করে ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন – সাভার পৌরসভার নামাগেন্ডা এলাকার মৃত ডাঃ আদম আলীর ছেলে ও সাভার প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুল হুদা(৫০), সাভার প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুল হুদার কথিত ভাগিনা ও সিরামিকস এলাকায় বাসিন্দা আল আমিনের ছেলে মেহেদী হাসান ওরফে খামচি মানিক(৪০), খামচি মানিকের বাবা ও সাভার পৌর এলাকার সিরামিকস এলাকার বাসিন্দা আল আমিন(৫৮), সাভার প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুল হুদার ভাই কামরুল ইসলাম ওরফে কামরুজ্জামান (৪০) ও শেখ শরীফ ওরফে পান শরীফ (৪৩) । এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামী করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘ সাভার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কালেক্টরির তৌজিভুক্ত ৬৬৫ নং, এস.এ ১৮০ নং হাল আর.এস ১৭১ নং, সাভার পৌরসভার দক্ষিণ দরিয়ারপুর মৌজার সি.এস ৯৮ নং, এস.এ ৩৭ নং, আর.এস ১১৮ নং, নামজারি ও জমাভাগ ১৩১১ নং জোতের ৩৭ ক কাত খতিয়ানে, সি.এস ও এস.এ ৭১ নং আর.এস ৯৭, ৯৮ নং দাগের ৯৬ শতাংশ জমির মধ্যে ৭.৩৪ শতাংশ জমি ননী বালা সাহা ও রস রাণী সাহা পৈত্রিক ও ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হয়ে বিগত ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ সালে ২১২৫ নং দলিল মূলে এবং ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৯২ সালে ৯২৩১ নং দলিল মূলে মালিক হন আমার মা মোছা: আঙ্গুর আক্তার ইসলাম। উক্ত সম্পত্তি দীর্ঘ ৩৫ বছর যাবত আমরা ৬ ভাই বোন ভোগদখলে আছি, ২০২০ সাল পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করে আসছি। হঠাৎ জানতে পারি জায়গাটি সরকারের খাস জমির “ক” তালিকাভুক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও সহকারী কমিশনার ভূমির(সাভার সার্কেল) বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ওই সম্পত্তি যেহেতু “ক” তালিকাভুক্ত হয়েছে আর সেটি যেহেতু আমরা এখনো দখলে রয়েছি, বৈধতার জন্য অন্যদের মতো আমার ভাই সাংবাদিক সালেহ আহমেদ তার সহকর্মী মেহেদী হাসান মানিকের সহযোগিতা চান।তিনি মেহেদী হাসান আমাদের ৬ ভাই বোনের নামে লিজ নিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি সেখানে প্রতারণার মাধ্যমে তার নাম ও সালেহ আহমেদ এর নামে লিজ পত্র আনেন। এই অবস্থায় মেহেদী হাসান মানিককে বিষয়টি সমাধানের জন্য বলা হলে তিনি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা চায়, আমরা মীমাংসায় রাজি হলেও সাভার প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুল হুদার নেতৃত্বে সঙ্গবদ্ধ একটি চক্রের মাধ্যমে জমির অর্ধেক দখলের চেষ্টা করছেন। বিষয়টির সমাধান চেয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করা হলেও কোন সুরাহ মেলেনি, উল্টো সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চাপে ফেলে দখল চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। গত শুক্রবার (২৫ জুন) সকাল সাড়ে ৮ টায় সরকারি অফিস বন্ধ থাকার সুযোগে সাভার প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুল হুদা ও মেহেদী হাসান মানিকসহ তাদের সহযোগীরা ওই জমি দখলের চেষ্টা করেন। তারা ওই জমিতে গাছ কেটে ঘর নির্মাণের চেষ্টা করেছেন। এ সময় বাদী ও তার পরিবারের সদস্যরা তাদের বাধা দেন। তখন তাদের মারধর করা হয়। ’
এ ব্যাপারে সাভার প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুল হুদা বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। রবিবার দুপুরে আমি ফেসবুকে জমি দখলের চেষ্টায় হামলা-পাল্টা হামলার বিষয়ে জানতে পেরেছি। আমি শুনেছি ওই জমি নিয়ে সালেহ আহমেদ এবং মেহেদী হাসান মানিকের মধ্যে বিরোধ আছে। দখলের সঙ্গে আমি জড়িত নই।’
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, ‘মামলার কপি এখনো হাতে পাইনি। মামলার কপি হাতে পেলে তদন্তের পর বিজ্ঞ আদালতে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করা হবে।’