গাজা উপত্যকার দক্ষিণে রাফাহ শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্যদের সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছে ছয় মাস বয়সী দুই জমজ শিশু। শিশু দুটির মায়ের আর্তনাদ সবাইকে কাঁদিয়েছে। সব হারানো ওই নারী বলছিলেন, এখন আমাকে কে মা বলে ডাকবে। সূত্র এএফপি।
রানিয়া আবু আনজা নামে কান্নারত ওই নারী বলছিলেন, দশ বছর ধরে অনেক চেষ্টা করেও তিনি মা হতে পারেননি। অবশেষে নানা পদ্ধতি অবলম্বন করে ছয়মাস আগে তিনি জমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। আর দশদিন পর ওয়াসিম ও নাঈম নামে ওই দুই শিশুর ছয় মাস পূর্ণ হতো।
রানিয়া বলেন, রাফাহ শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের পুরো ভবনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এতে তার স্বামী শহীদ হয়েছেন, তার সন্তান শহীদ হয়েছে, পরিবার শহীদ হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ হামলায় ছোট বড় মিলে মোট ১৪ জন নিহত হয়েছে। সব মিলিয়ে এটি একটি গণহত্যা ছাড়া আর কিছুই নয়।
রোবববার ওয়াসিম ও নাঈমকে স্থানীয় একটি কবরস্থানে দাফন করা হয়। সে সময় রানিয়ার আর্তনাদে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠছিল। চিৎকার করে তিনি বলছিলেন, এখন আর আমাকে কে মা বলে ডাকবে।
রানিয়া যখন তার দুই সন্তানকে বিদায় জানাচ্ছিলেন, তখনও পরিবারের অন্য সদস্যদের উদ্ধারে সেই বিধ্বস্ত বাড়িতে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত ছিল। ইসরায়েলি হামলায় বাড়িটির চারটি তলা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তাদের অনেকেই শেষ পর্যন্ত রাফা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী সেখানেও হামলা চালাতে শুরু করেছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বারবার সতর্ক করেছেন, রাফাহতে হামলা করা হলে প্রচুর হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে। তাই তারা ইসরায়েলকে রাফাহতে হামলা চালানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু ইসরায়েল তাদের সে আহ্বানে কোনো কর্ণপাত করেনি।