মোঃ তালাত মাহামুদ, নরসিংদী প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশে জমিসংক্রান্ত বিরোধ একটি সাধারণ এবং সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে যখন পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এসব বিরোধ সৃষ্টি হয়, তখন তা পরিবারের মধ্যে বিভক্তি ও সামাজিক উত্তেজনা তৈরি করে। এমনই একটি ঘটনা হলো ইঞ্জিনিয়ার জুয়েল মোল্লা এবং তার চাচা রাসেল মোল্লার মধ্যকার বিরোধ, যেখানে জমি নিয়ে ঝামেলা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
জুয়েল মোল্লার অভিযোগ: জুয়েল মোল্লা তার ন্যায্য জমি ফেরত পাওয়ার জন্য আইনিভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তবে এই পদক্ষেপ নেওয়ার পরেই তিনি তার আপন চাচা রাসেল মোল্লার ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার হন।
রাসেল মোল্লার ভূমিকা: রাসেল মোল্লা একজন ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত, যিনি প্রশাসনের প্রভাব খাটিয়ে জুয়েল মোল্লার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার সময়ে এই প্রভাব কাজে লাগিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে,এবং বর্তমানে বিএনপিতে বিএনপি’র কিছু লোকের সহযোগিতায় অনুপ্রবেশ করেছে তার উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। টাকার প্রভাব থাকায় যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে সে দলের ছত্র ছায়ায় গিয়ে নিজের প্রভাব বিস্তার করে।
পারিবারিক হতাশা: রাসেল মোল্লার প্রভাব এবং অত্যাচারের কারণে জুয়েল মোল্লা ও তার পরিবার আতঙ্কের মধ্যে বাস করছে। তারা সার্বক্ষণিক ভয়ে রয়েছে যে রাসেল মোল্লার ষড়যন্ত্রে তাদের আরও ক্ষতি হতে পারে।
ভাই শাহ আলম মোল্লার মৃত্যু: রাসেল মোল্লার জেঠাত ভাই শাহ আলম মোল্লা জমি ২০১০ সালে স্থানীয় কিছু শক্তিশালী মহল নিয়ে রাসেল তা জোরপূর্বক দখল করে নেয় তার পর দিনের পরে দিন বছরের পরে বছর সবার দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোন সুরাহা না পেয়ে 2020 সালে স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেন । এই ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক সম্পর্কের মধ্যে অত্যাচার করে আসছেন।
ক্ষমতার অপব্যবহার: আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকার সময়, রাসেল মোল্লা প্রশাসনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং সেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি জমি দখল ও মিথ্যা মামলা দায়েরের মত কার্যকলাপ চালিয়ে যান,যা বর্তমানেও চলমান আছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি’র কিছু লোকের সহযোগিতায় বর্তমানে তাকে বিএনপি’র বিভিন্ন প্রোগ্রাম এবং কাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায় এবং পূর্বের ন্যায় বিএনপির ক্ষমতাকে কাজে লাগানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
রাসেল মোল্লা এবং জুয়েল মোল্লার এই জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এ পর্যন্ত ১২ থেকে ১৫ টা স্থানীয়ভাবে দরবার সালিশ অনুষ্ঠিত হয়,যা শিবপুর থানার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি, রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং প্রশাসনের ব্যক্তির সহযোগিতা করা হয়,এই সব দরবার সালিশে জুয়েল রানার পরিবার হিসাব নিকাশে জমি পেলেও রাসেল মোল্লা কোন প্রকার দরবার সালিশ না মেনে তার পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের করে পুলিশি হয়রানি করতে থাকে এবং রাসের মোল্লার টাকার প্রভাব থাকায় পুলিশও এইসব মামলার সঠিক তদন্ত না করে মিথ্যা তদন্ত রিপোর্ট আদালতে প্রেরণ করেন।রাসেল মোল্লা জুয়েল মোল্লার পরিবারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ দায়ের করে মামলা করেন স্থানীয় ভাবে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে এসব অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। রাসেল মোল্লার মামলার প্রতিটি সাক্ষী তার পরিবারের লোকজন, এক দুইজন আছে তার পরিবারের বাইরে যারা তার অর্থের মাধ্যমে পৃষ্ঠপোষকতায় লালিত পালিত লোকজন।
এই ঘটনা শুধু জুয়েল মোল্লার পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি বাংলাদেশের জমিসংক্রান্ত বিরোধের একটি সমসাময়িক উদাহরণ। এতে প্রতীয়মান হয় যে, রাজনৈতিক প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহার সাধারণ মানুষকে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ ধরনের ঘটনার কারণে সমাজে ন্যায়বিচারের প্রতি আস্থা নষ্ট হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষায় প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
জমিসংক্রান্ত বিরোধ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের এই উদাহরণটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি গভীর সংকটের ইঙ্গিত দেয়। জুয়েল মোল্লার মত সাধারণ নাগরিকরা যাতে ন্যায়বিচার পেতে পারেন, সে জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু আইনি ব্যবস্থা এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা।